শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭

বিভ্রান্ত মাঘ

উলের চাদরে অারাম কেদারায়-
'এক কাপ চা'
শীতোষ্ণমন্ডলেই বেশ অাছি।

নাতিশীতোষ্ণমণ্ডল ভুলে গেছি
বসন্তীরঙ শিকেয় তুলেছি।
বসন্তদূত দুয়ারে অসময়ে
কড়া নাড়ো!

শীতের প্রভাতে নরম রোদে-
'এক গ্লাস রস'
মাঘের কাঁপুনিতেই বেশ অাছি।

শরৎ পূর্ণিমা ভুলে গেছি
রক্তজবা বিকিয়ে দিয়েছি।
দক্ষিণ পবন  অসময়ে-
মৃদু হাঁকো!

নিশি রাতে লেপের তলে-
'ঠান্ডা অায়েশী ঘুম'
শৈতপ্রবাহে বেশ অাছি।

অাষাঢ় বাদল ভুলে গেছি
বর্ষাজল দাদন দিয়েছি।
বসন্ত কোকিল অসময়ে-
সুর তোলো!

ভয়কে নিকুচি।

সমুদ্রে পেতেছি শয্যা,
শিশিরে ভয় কি?
অনলে গড়েছি বাসর,
শিখায় ভয় কি?

নির্বাসনে সপেছি জীবন
বিচ্ছেদে ভয় কি?
নিরুদ্দেশে বেছেছি লক্ষ্য,
হারাতে ভয় কি?

পাথরে বেধেছি বুক,
দুঃখে ভয় কি?
নদীতে ডুবিয়েছি অাখি,
কান্নায় ভয় কি?

অাকাশে ছড়িয়েছি সপ্ন
কালোমেঘে ভয় কি?
রাতে হয়েছি নিশাচর
অন্ধকারে ভয় কি?

দূর্গমে করেছি যাত্রা,
অনিষ্টে ভয় কি?
জীবনকে করেছি বলি,
মরণে ভয় কি?

বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রতিজ্ঞাময় প্রেমী

একটা ফুল লাল, কলি হলুদ
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে অবোধ।
এটা অাকাশ নীল, মেঘ সাদা
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে বোকা।

একটা সাগর হীম, জল নীলক,
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে নির্বাক।
একটা কানন  লাল, পাতা সবুজ
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে অবুঝ।

একটা কয়লা কালো, হিরে সাদা
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে ভেদা।
একটা বৃক্ষ সবুজ, কাণ্ড কালা,
মধ্যে কেন অমিল, বুঝতে পারে গাঁধা।

তবুও-
অমন যে সে মহাময়ী সেও বুঝেছে ভুল,
ভুল করে তাই বিষ ঠেলেছি
নীল ভ্রমরের  হুল।

অমন যে সে বর্ণচোরা সেও বুঝেছে ভুল
ভুল করে তাই কষ্ট দিয়েছি
অশ্রু জলের রোল।

অমন যে সে প্রজ্ঞাময়ী সেও কষেছে ভুল
ভুল করে তাই নিকেশ  করেছি
বিরহ অনলের দোল।

হে-
অবনী, তোমায় ঐ স্পর্শহীন বাহু
অামায় অার উত্তেজিত করে না।
পুষ্প, তোমায় ঐ উত্তাপহীন সৌরভ
অামায় অার কামনায় ভাসায় না।

শশী, তোমার ঐ শীতলা জোছনা
অামার অার উদ্বেলিত করে না।
পুষণ, তোমার ঐ জ্যোতিহীন অালো
অামায় অার অাকর্ষণ করে না।

এখন-
অামার চাই জীবন্ত মাংসপিন্ডের দলা
অামার চাই রক্তে মাংসে গড়া প্রতিমা।
অামার চাই কামনার ছাঁচে উত্তাপ দেহ
অামার চাই যৌবনের শিহরিত স্পর্শ।

অতঃপর-
অামার অাগুন বন্ধক রেখেছি
অন্য কোন পদ্ম বনে,
পদ্ম কন্টক সঙ্গে নিয়েছি
হারিয়ে গহিন তিমির কুঞ্জে।

অামার অনুভূতি বিক্রি করেছি
অন্য কোন রঙ্গ বাজারে,
রঙ্গ বিষ সঙ্গে নিয়েছি
হারিয়ে সীমাহীন অচিনপুরে।

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রতিজ্ঞাময়ী প্রেমী

কি দেখিয়েছ অামায়?
ভয়ংকরী ভঙ্গিমায়।
কি  দিয়েছ অামায়?
অমানীশার গহীনতায়।
কি বলেছ অামায়?
কুৎসিত শব্দমালায়।
কি শুনিয়েছ অামায়?
তিরস্কারের পরছায়ায়।

তুমি কৌমার্যচারী
প্রকৃতই  ধর্ষণকারী।
তুমি  নারীবাজি
প্রকৃতই হত্যাকারী।
তুমি নগ্নতাচারী।
প্রকৃতই ফুর্তিবাদী।
তুমি ভন্ডতপ্বসী
প্রকৃতই ছলনাকারী।
তুমি শরীর পুজারী
প্রকৃতই যৌনকারী।
তুমি বসকারী  
প্রকৃতই  অন্ধকারী।
তুমি ধ্বংসকারী
প্রকৃতই কুঅশরীরী।

অার পানে চাইবো না 
অার স্বপ্ন দেখবো না।
অার তোমায় শুনবো না
অার মায়ায় রইবো না।
অার কথা বলবো না
অার অাগুনে পুরবো না।
অার অাশায় থাকবো না
অার বিশ্বাস করবো না।
অার দীপ জ্বালাবো না
অার অপেক্ষা করবো না।

অামি ফিরে অাসবো না
অাবার ভালবাসবো না
অাবার ক্ষমা করবো না
অাবার প্রেমে বাধবো না।

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

পদ্মাবতীর মধূঘাটী

পদ্মাবতী পদ্মমুখী
কোথায় তোমার বসতবাড়ী?
পদ্মাবতী পদ্মনারী
কোথায় তোমার মধূঘাটী?

যৌবনের উঠোন কোণায়
উঁকি দেয় ঐ গোপন গর্ত।
ভ্রমর হয়ে তুলবো মধূ
এটাই অামার প্রথম শর্ত।

ভ্রমর এসে উড়বো উঁঠোনে
পুড়বো হুল গর্তে কোঁণে।
মসনদ গেড়ে রইব ঠাঁয়
পদ্মাসনের স্বপ্ন ছোয়ায়।

পদ্মবতীর পদ্মঘাটি
পদ্মনারীর পদ্মনাভী।
খাবো সব পদ্ম ঘাটি
বানবো এক বসত পাটি।

পদ্মাবতী পদ্মানারী
গর্ত খুড়ি, ঘর গড়ি।
পদ্মাবতী পদ্মমণি
স্বপ্ন গড়ি, ভালবাসি।

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭

স্তবক প্রিয়তমায়

তুমি নিদ্রাচ্ছন্ন-
তুমি অামাতে মগ্ন জানতে পারায়,
অামি নিশ্চিত হয়েছি-
তোমার বেষ্টিত  নিরাপত্তায়।

ভালবাসার ঐ অসীম-
বিশ্বস্ত ধারাবাহিকতায়,
অবলাল বিশুদ্ধ সূত্রে-
দুবাহুতে অাকড়েছ অামায়।

এ দাশ অাজি-
তোমার বুকে মাথা ঠাঁয়,
মম শৃঙ্খলাবদ্ধ হাত-
দুটি সঁপে তোমায়।

অঞ্জলী দিয়েছি-
তোমার ঐ অাবক্ষ হৃদে,
প্রাণ সপেছি গোঁ তবে-
ওই অাচঁলের ছায়ায়।

ভালবাসি বলেছি হে-
প্রিয়তমা ঐ কানে কানে,
হেলেছি দুলেছি হৃদয়ে-
হৃদয়ের অাদিম অাকর্ষণে।

কৃতজ্ঞময়ীর অার্শ্বীবাদে-
অাজি ভালবাসার তীরে।
ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়-
হে প্রিয়, জনমে জনমে।

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রিয়মুখ

অাহা জীবন কত সুন্দর
সুখের অন্তে দুখ
দুখের অন্তে সুখ।

ক্লান্তি শেষে নিড়ে ফিরি
দেখতে  তোমার প্রিয়মুখ।

জীর্ণতা অামার ঝরে যায় তবে
এই সুন্দর সংসারের মায়ায়।

এই স্বর্গ এইতো অানন্দ
খুজে পাই ঐ ভালবাসায়।

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

-:অভিশপ্ত অাত্মা:-


অাত্মাঃ হে জীর্ণ দেহ, অামি তোমার জীবনে দুষ্টগ্রহ, মুক্তি দাও অামায়। তোমার ঐ মরণব্যাধির জন্য তুমিই দায়ী। হে দেহ তোমার পাপাচারের শাস্তি কেন অামায় পোহাতে হচ্ছে? অার পারি না, দয়া করে এবার ছাড়ো, বিসর্জন দাও অামায়।

দেহঃ (অাত্মার মিনতিতে সায় দিয়ে) এ বুকে একটি মাত্র ক্ষীণ অাশা অবশিষ্ট অাছে। তা মৃত্যুর অাশা। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত সে অাশা বেঁচে থাকবে। অামি মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে যাব; অামার বুক ভেঙ্গে যাবে। তখন সব দুঃখের অবসান হবে।


অাত্মাঃ (দেহের সাথে সুর মিলিয়ে) প্রতি ক্ষনে একটি অাকুতি, হে প্রভু অামাদের মরতে দাও।
প্রভুঃ (অাত্মায় সুধায়), হে অাত্মা হে দেহ, তবে তোমাদের ইচ্ছাটা পূর্ণ হোক। অতঃপর অাত্মা মুক্তি পায় দেহ নামক কারাগার হতে। বিদায়বেলা বিষাদের পরিবর্তে সকলের মাঝে বরং অানন্দময় হয়ে ওঠে। হয়ত প্রভুও তাদের মুক্তি দিয়ে হালকাবোধ ও নিস্তার লাভ করে

অাত্মাঃ (অাত্মা সাগ্রহে ও অপার অানন্দে বলে ওঠে), অাহ্ অবশেষে মুক্তি পেয়েছি। হে নিষ্প্রাণ দেহ, অামি এখানেই অাছি, পাশাপাশি।

দেহঃ অাত্মা তোমায় মুক্তি দিয়ে অানন্দ হচ্ছে খুব। অামিও বেশ মজাতেই অাছি, কোন ব্যাথা অার নেই, এইচঅাইভি ভাইরাস অার ব্যাক্টেরিয়া অনুজীব সমূহ অার অামায় অস্থির করছে না। যদিও ওরাও খুবই খুসি জয়ী হয়ে, কিছুকাল মুহুর্তের মধ্যেই ওরা অামায় নিঃশেষ করে নিজেরাও অাত্মাহুতি দিবে। এইতো গাপুসগুপুস করে খাচ্ছে অামায়! পচনের অারম্ভ! অবশেষে অামি সুখি, অাত্মা সুখি, এইচঅাইভি সুখী, সবাই সুখী।

অাত্মাঃ অামি নিরোগ মুক্ত অাত্মা, অামি অবিনশ্বর, বন্ধনমুক্ত। তবুও হঠাৎ সুখের দোলাচলে হেলছি অার দুলছি। কিসের অজানা মায়ায়, তোমায় খুজে ফিরছি!

অবশেষে প্রিয়য়মুখ! অদৃশ্য তলে তোমাকে খুজে পাই। এখন অার তোমার সামনে বিরজমান হতে অার কোন ভয় নাই। মুখোমুখি মাথা উচু করে অজস্র না বলা কথা বলতে অার বাধা নাই। অামাকে অার ভর্সনা শুনতে হবে না। যদিও অামার এই অধঃপতনের একমাত্র কারন, অামার প্রতি তোমার চিরন্তন বিমুখতা।

তোমার অন্তরাল হতে, অগনিত বিভ্রান্ত অাত্মার মাঝখানে অাবার তোমার অপার্থিবে ফিরে অাসার অাশায়-

অামি অাত্মা নিষ্পলক চোখে তোমার মাঝে অাটকে থাকবো একই ভাবে, একদৃষ্টিতে, অনন্তকাল ধরে। বলে যাই শুধূ ভালবাসি!

#কল্পকথন

মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৭

হনুজ দিল্লী দূরঅস্ত

সত্যিকারের সবল চিত্ত মানুষ কখনো দিব্যি করে তা ভঙ্গ করে না। অার যদি করেও থাকে তারা তা ভঙ্গ করার মাসুলও দিতে প্রস্তুুত থাকে। বর্তমানকালের অযোগ্যতার মাফকাঠিসমূহ তোমার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশকের অনুঘটক হতে পারে। তোমার জীবনে এখনো অনেক পথ বাকী।

অামি নিশ্চিত, এই সাতাশ বছরে অনেক শপথই রাখতে পারি নাই বা সত্যিকারের সবল চিত্ত মানুষ হতে পারি নাই। তাই প্রকান্তরে এর মাসুল দিতে সদা প্রস্তুুত অাছি বা দিচ্ছি। দুঃখ, ব্যর্থতা ও ভুল সিন্ধান্ত অামায় বিচলিত করতে পারে সত্যি তবে পথভ্রষ্ট নই মোটেও।
হনুজ দিল্লী দূরঅস্ত (দিল্লী এখনো অনেক দূর)!

Fact: Go ahead just alone if nobody accepts your invitation.

সুখী বিবাহিত জীবন'

একজন মানুষ তখনি অসুখী ও দুঃখ যন্ত্রণা মধ্যে থাকে যখন সে তার সহজাত প্রবৃত্তির নির্দেশনানুযায়ী চলতে পারে না। অার তখন সে সৃষ্টিকর্তার সেরা সৃষ্টি হয়েও তার স্বাভাবিক জীবনের অঙ্গ, প্রেম, অানন্দ, সম্ভোগ এবং পরিতৃপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। অারো গভীর ভাবে চিন্তা করলে উপলব্ধি করা যায় যে অানন্দ সম্ভোগের তীব্র চাহিদা অথবা উপাদান সমূহের লভ্যতায়ও অতৃপ্তিময় ভোগের পরিনামে সে পরম বিতৃষ্ণা অার মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে থাকে।

সুতরাং তার দেহের রক্ত-মাংস শুধু জীবনোপভোগের সুযোগ লাভের জন্য কৌমার্যব্রত ভঙ্গের চেষ্টা করেই ক্ষান্ত হয় না বরং দেহ নামক কারাগারের বন্দী দশা থেকে মুক্তির জন্য নিরব অার্তনাদ করতে থাকে। শুধুমাত্র প্রেমের পরম মূহুর্তে সে অাত্মা শূন্য মার্গে উড্ডীয়মান হয় অাবার ঐ মূহুর্তের অন্তেই দ্রুত খাঁচার অভ্যন্তরে ফিরে অাসে। অাত্মার এই স্বল্পস্থায়ী স্বাধীনতাই কারাজীবন শেষে দেহের প্রাচীর ভাঙ্গার পর অাত্মার স্থান নির্দেশ করতে যথেষ্ঠ। যে স্থান অনন্ত অানন্দের জীবন, সে জীবন স্বয়ং অনন্তের জীবন। যে ঐ অবস্থানটি নির্ণয় করতে পারে সেই প্রকৃত ভাগ্যবান ও জীবনের স্থায়ী অর্থ খুজে পায়।

কারন ধন-সম্পদ, সন্মান-প্রতিপত্তি একটি মোহ যা ক্ষণস্থায়ী; স্থান কাল ও পাত্রের অবস্থান ভেদে তার পরিবর্তন হয়, অপরদিকে একজন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি অপরিবর্তনীয় কারন তা অাত্মার সাথে সর্ম্পকিত। সুতরাং অাত্মার মুক্তি, সুখের সন্ধান, প্রকৃত প্রেম সর্বোপরি পার্থিব অানন্দের জন্য হলেও যোগ্য সঙ্গীর সাহচর্য অবসম্ভাবী।

সারমর্মঃ 'সুখী বিবাহিত জীবন' জিন্দাবাদ!

কুৎসিত পিশাচীনী

এবার সে সম্পূর্নরূপে বিধ্বস্ত। অবশেষে সে জানতে পারে তার প্রিয়তমা চিরতরে হারিয়ে গেছে। সে যদি কখনো বা ফিরেও অাসে, তবে তার প্রিয়তমা রূপে নয়, একজন দুষ্ট প্রবৃত্তির দাসী অথবা কুৎসিত পিশাচীনী হয়ে ফিরবে।

পথ চলতে যাকে দেখবে তার প্রতি ভয়াল দৃষ্টি হানবে। হয়তবা অপরাধ করার উদ্দেশ্যে চোরের মতন ওত পেতে বসে থাকবে। কারন যে একাবার তার সবচেয়ে প্রিয় অারধ্য ধনকে হারিয়ে অাত্মবিসর্জনের বলি হয়, সেই প্রেমিকার অার কিই বা হারানোর ভয় থাকে?

এইতো তবে মৃত্যু!

মৃত্যু! একরাশ সপ্ন অার জয়রথ অবসানের মৃত্যু। অসীম কষ্ট অবসানের মৃত্যু। অমেঘ সুখ, অাত্মতৃপ্তি ও সমৃদ্ধির মৃত্যু। অর্জিত সকল সফলতা, জ্ঞান ও ভালবাসার মৃত্যু। হ্যা, এইতো তবে মৃত্যু!
যেই অামি সারা জীবন সমাজ বন্ধন ছেড়ে শূধু একটি ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি যেন অামার মতো হঠকারী বিশ্বাসঘাতক সমাজে থাকলে অার ছলনা করা, হৃদয় ভাঙ্গা, খুন কিংবা অন্য কোন জঘন্য অপরাধ করতে না পারি।

সেই দুরন্ত অপরিমেয় অামি অাজ জীর্ণদেহের প্রতিচ্ছবি, শক্তিমত্তা হতে দুর্বলে পরিনত। যেই অামি মৃত্যুকে অালিঙ্গনের প্রত্যাশায় শয়তানের পথ বেছে নিয়েছিলাম, অাজ সেই অামি মৃত্যুর কোলে অসহ্য বেদনায় ছটফট করছি। 

বরাবরের মতো দৃষ্টির শেষ পলকে তোমার হাসি-কান্না মিশ্রিত মুখখানা দেখছি! অামার শ্রবণের শেষ ধ্বনিমালায় তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছি! তবে এই শেষ নিশ্বাস কেন অারো একটু দীর্ঘতর নয়? তোমার স্মৃতি নিয়ে অামি যে অারো কিছুক্ষণ বাঁচতে চাইছি এখন!

অামি কি অাবার ফিরে অাসতে পারবো তোমার বুকে? কোন এক নিযুত কোটি মহাকাল অন্তে অাবার কি তোমার দেখা পাবো? তোমার অাত্মাকে তখন কিভাবে চিনবো অামি? তখন তুমিই বা কোনরূপে থাকবে? প্রাণোচ্ছল কিশোরী, কৌমদী যুবতী, মাতৃস্নেহা জননী নাকি অসহায় বুড়ি?

যে মৃত্যু অামি সবসময় কামনা করেছি, এখন সেটাই অামার শত্রু হয়ে দাড়িয়েছে। তোমায় অামি অার কেন দেখতে পারছি না? কেন হারিয়ে যাচ্ছি অন্ধকার অতলে! কেমন যেন একটি তীব্র কষ্ট অার তৃষার্ত শুষ্কতম অনুভূতি! সত্যিই, মৃত্যু কখনো সুখের হয়না! 

এখন অন্যান্য জড় বস্তুর মতো অামিও পাথর হয়ে শুয়ে অাছি। অাত্মাটাও স্বার্থপরে মতো কোথায় চলে গেছে। এমন করে অারো সহস্র কোটি বছর এক অনন্ত নির্বাসনে পড়ে থাকবো। অার প্রিয়তমা, এক যুগের ন্যায় তুমি হয়ত বিরহের অশ্রুজল বুকেধরে অাজ রাতেও অামার জন্য প্রতিক্ষা করবে.......! ফিরে অাসার........!

#কল্পকথন

লাল মদের অণুগল্প

মানুষের জন্ম একটি কারনেই, আর তা হলো স্বীয় কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করা। কিন্তুু আমি এখন মারাত্মকভাবে ক্ষত বিক্ষত কারন প্রতিটি ক্ষেত্রে বির্বজিত আর কাপুরুষত্বের পরিচয় দিয়েছি। আমি শয়তানি আর ভুল পথে নিজেকে সমার্পন করে তোমায় কষ্ট দিতে চেয়েছি। আমি পেরেছি, তোমার এই নিরব আর্তনাদ তার সাক্ষ্য বহন করছে! এখন তোমার চোখে আমি অধঃপাতিত যদিও আমি মনেপ্রাণে তাই চেয়েছি।

জানি তুমি বরাবরের মত আমাকে উন্মুক্ত বুকটা চিড়ে দেখাবে যে কি জ্বালায় আর যন্ত্রানায় বুকের শিরাবিথী শুকনো ডালপালার চেয়েও দাউ দাউ করে জ্বলছে। আসলেই আমি নিকৃষ্ট আর ইতর কারন তোমার মতো রমনীকে দুঃখ যন্ত্রনা আর নির্মম কষ্টের জ্বালা দিতে পেরে অদ্ভুত আনন্দ লাভ করছি।


চেয়ে দেখ! তোমার আর আমার ভালবাসার মাঝে কঠিন বিচ্ছেদের মহিমা কীর্তন করছে। দুরে থাক! স্পর্শ করো না, ভালাবাসার বিচ্ছেদের মাঝে তোমাকে আবার নতুন করে সুখ ও কামনার মাঝে ঠেলে দেওয়ার কোন অধিকার আমার নাই।

আহ! নাহ! তুিম যা ভেবেছিল তা নয়, আমাদের স্বপ্ন গুলো অনেক আগেই মরে গেছে। শুধুমাত্রই হৃতপিণ্ডে জীবন স্পন্দিত হচ্ছে, যেমন ইটের আঘাতে ধূলিতে কাতরানো কবুতরের মতন ঐ জীবনীশক্তি প্রবল ভাবে উচ্ছ্বসিত হচ্ছে মাত্র।
যে প্রেম আমাদের এক সুত্রে বেধেছেলি সেই পরাজিত প্রেমই সামনে তোমার দিনগুলোতে সাহস সঞ্চয় করবে। দেখবে একদিন আমাকে ঠিকই ভুলে যাবে, তোমার আবার পুনরুজ্জীবন হবে। তুমি এখনো তরুণী, সারাটা জীবন পরে অাছে।

এই তুমিই, আবার আমার কথা যখন ভাববে, তখন তা একটা স্বপ্নের মতন মনে হবে। মনে হবে তুমি যেন পথ হারিয়ে কোন এক দুবৃর্ত্তের সাক্ষাৎ পেয়েছিলে, যে তোমার অনিষ্ট সাধনের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল।

সত্যিকারে যার কাছে থাকবে, যে কখনো তোমার হাত ছাড়বে না, সেই তো তোমার প্রাপ্য। এখন তোমার সবকিছু অন্ধকার মনে হচ্ছে, তবে অচিরেই এই অন্ধকার কেটে যাবে।

তখন তুমি উপলব্ধি করতে পারবে যে তোমার সাময়িক দুঃখের কারন হয়ে আমি মঙ্গল সাধন করেছি মাত্র। যেমন করে অসুস্থ মানসিক রোগীর প্রতি, তার রোগ সারাতে অসুস্থ দেহে নির্দয় বৈদুতিক তরঙ্গ প্রবাহিত হয়। হা হা হা, আমি তোমার বৈদুতিক তরঙ্গ!

তবে এসো বিদায়ের শেষবেলায় সরেস মদ পান করা যাক। নাও চুমুক দাও। ওকি! গ্লাসের কানায় তোমার ঠোট, তারপরও তোমার দাত কেন দ্বীধায় ঠকঠক করছে?
প্রিয়তমা! ফেলে দিও না, বহু কষ্টের সঞ্চিত প্রবাহিত রক্তকণার তৈরী এ মদ, এতো হৃদয়ের প্রবাহমান রক্তাক্ত মদ, নাও পিয়াস মিটাও। মুক্তি দাও আমায়.............
#কল্পকথন

মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৭

পিপাসার্ত প্রেমিক

হে রমনী,
অামার হৃদয়ে ঝর তোলা মোহিনী রানী
এ হৃদয়ের অারাধনাতে শুধূ তুমি অনুরাগী।
তোমায় পেতে সপ্নে-কল্পনায় বিভোর থাকি
এতটুকুন ছোয়ার অাশে নিরন্তর প্রহর গুনি।

হে কুমারী
নাশপাতির মতো তোমার গায়ের রং এর দূতি
চিকন নাকের নাকফুলে যেন প্রেমময় অার্তি।
কামার্ত ও উজ্জ্বল অাহবানে ঐ বেদানার মতো ঠোঁট
হরিণীর মতো টানা টানা অার মায়াভরা ঐ চোখ।

হে ইন্দ্রাণী
ঐ মুক্তার মতো ঝকঝকে তোমার সারি সারি দাঁত,
সরূপল্লবের ন্যায় প্রসারিত মিহি পেলবী হাত।
সখীর ময়ূরী চলনে যেন যৌবন উদ্বেল করা ছন্দ
তোমার নুপরের কিঙ্কিণী সুরে মন ভোলানো অানন্দ।

হে মায়াবী
ঐ চোখে দুই ফোটা অশ্রু কখনো হাসির বা কান্নার,
কে বুঝিবে হাসিতে কেনবা সুখ বা বিরহের ঝংকার?
ঐ ঠোটে অাবার সহর্ষ বা হঠাৎ বিষাদের রোল
হৃদয়ে কখনো অানন্দের ছোয়া বা কষ্টের দোল।


হে প্রিয়ন্তি,
লোভী রোদের কীর্তন  ঐ রক্ত গোলাপের লাল  চিবুকে
তুমি অারো রহস্যময়ী সর্বাঙ্গে  রোদের সিঞ্চণে ।
ঐ হাসির  খিলখিলিতে  বুকের নাচন ওঠে হেলেদুলে
বক্ষপট  মেঘের অাড়ালে উকিঁ দেয় ঐ চাঁদের বুকে।

হে প্রিয়তমা
তোমার  সুধা অাকন্ঠ পান করা অামার অাজন্ম বাসনা
ভ্রমরী গুনগুন সুরে মধূ অাহরন করা অামার অারাধনা।
প্রতিটি ফুলের সৌন্দর্যে জিকিরের তাশারিফ করি অামি
সেই তারিফের বাহানায় ঐ মধূ ভান্ডার মেলে ধরবে তুমি।

হে ঝরনাধারা
এ হৃদয় তপ্ত মরূম্ভূমি, তৃষ্ণার্ত একটা তৃণের মতো
মহাকাল অপেক্ষায় প্রিয়তমা, অামি প্রেম পিপাসার্ত।
তুমি তোমার ঐ যৌবন  ঢেলে দাও তবে  গেলাসে
তুমি হলে সেই অমিয় সূধা যা পিপাসা মেটাতে পারে।

হে যুবতি
তোমার অালিঙ্গনের মধ্যে দিয়ে অামি হারাতে চাই
অামার অালিঙ্গনের সোহাগে তোমায়  পিষ্ট করতে চাই।
তৃষ্ণা মেটানোর জন্য সবটুকু যৌবন করতে পারি হরণ
বক্ষদেশ, নিতম্ভভান্ডার, প্রবাহিণী উপত্যাকায় হোক তবে বিচরন।

হে মমতাময়ী,
যৌবন নদীতে তুলেছি পাল তটে ফিরার অপেক্ষা
তোলো তোমার তীরে নদী, এ মাঝির অার তর সয় না।
অাহা কি সুখ সুধায়, কি  মায়ায় অাচ্ছন্ন করেছে অামায়
অামি জল চাই, চাই চাই, পিয়াস মিটাও, সিঞ্চণ করো অামায়।

সোমবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৭

জীবনসঞ্চারিণী

সুদর্শনা প্রিয়তময়েষু
একটিবার ঐ চোখের পাতা খুলো, দেখ অাখিঁ মেলে,
চেয়ে দেখ রাঙ্গা দিবাকর নিকশ অাধারকে ভোগদখলে মেতেছে
তোমার অার অামার প্রেমলীলায় প্রতিক্ষার প্রভাত ফিরে এসেছে।


প্রেয়শী প্রিয়া
একবার দৃষ্টিদান করো ঐ খোলা জানালার পানে,
অাকাশ এসে তোমার জানালায় লুকোচুরির খেলায় মেতেছে।
তোমার ধবধবে শুভ্র মুখের জেল্লায় সে ফর্সা হতে শুরু করেছে।


বুলবুলি মেহেবুবা,
অার একবার সুর তোলো ঐ সুরেলা কন্ঠের ধ্বনিতে
বাগানে পাখিরা তোমার নামে গান গাইতে শুরু করেছে।
ঐ সুরের লহমায় ফুলেরা প্রস্ফুটিত হয়ে সুবাস ছড়াচ্ছে।


অাদুরে প্রিয়তমা!
এখনি সময়, চেয়ে দেখ! কতরূপ খেলা করে এই ভোরের হিম বাসাতে!
ঐতো পর্দার ফাঁকে বায়ুপ্রেম চুপিচুপি তোমার চুলে হারিয়ে যাচ্ছে।
তোমার নামে উৎসর্গ করা গোলাপের মিষ্টি গন্ধ ভেসে অাসছে।


হে মুগ্ধময়ী মনোহরী,
অামাদের এ অসীম ভালবাসা একদিন ফুরিয়ে যাবে,
ঐ রক্তকাঞ্চনের গায়ে লেগে থাকা শিশির বিন্দুর মতোই তো এ জীবন।
সকালের রোদ এসে অাপনা অাপনিই একসময় অামাদের মিইয়ে দেবে।


হে জীবনসঞ্চারিণী,
তুমি কত সুন্দর! তাই এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর।
এই সংসার ছেড়ে কাউকে তো যেতেই হবে অগ্রে অথবা পশ্চাতে
হয় তুমি না হয় অামি, শেষে কে বিরহের অাগুনে জ্বলবে?

রঙ্গকাল

অামি মহাকাল

অামি অাকাশ অামি পাতাল অামি সুউচ্চ অামি পতিত। অামি নম্র অামি লৌহ অামি হার অামি বিজিত। অামি হাস্য অামি অশ্রু অামি মিলন অামি বিরহ। অাম...