বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬

একটি অসমাপ্ত কবিতা

বিরহের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে অাজ অামি ক্লান্ত, হে কবিতা
অলোকের যাতনায় একমুঠো সুখের জন্য অাজন্ম কান্না।

হে কবিতা! দিশাহীন কবিকে কেনই বা এক পৃথিবী দিশা দিতে গেলে?
যে কবি অাপন জীবন তরী ছন্দে বাধতে পারে না
সে কিভাবে তোমায় স্বপ্ন দেখাবে?

যে কবি যৌবনা দেহ কখনো ছুঁয়ে দেখিনি।
যে কবি কোন উত্তপ্ত ঠোটে চুমু অাঁকেনি।
যে কবি কোন সুডৌল মাংস পিন্ডে সাঁতার কাটেনি।
যে কবি কোন নারীর ভরা জোয়ারে  বৈঠা ডুবাইনি।

কি খেয়ালে কবিতা এমন অনভিজ্ঞ কবির হাতে দিশা দিলে?
যে কবি তার অাজন্ম একটি সুন্দর পংক্তির  জন্য দ্বারেদ্বারে ঘুরে,
যে কবি দেশান্তরি হয় হৃদয়ে লালিত অব্যক্ত ভালবাসা বিলিয়ে।

যে কবি ভালবাসা ফেরী করে
যেন সে পরপুরুষের সাথে শোয়া বাজারী বেশ্যা
তবু প্রতিদানরূপ ভালবাসাতো সোনার হরিণ,
পায়না একচিলতে সহমর্মিতা।

যেখানে এক প্রস্থ প্রেমি কবিতাও
তার থেকে মুখ ফিরে নেয়,
কিচ্ছু না পেলেও তার কিই বা  তার ক্ষতি,
অারে সে তো জন্মান্ত পরিত্যক্ত।

হ্যা অামি সেই পরিত্যাক্ত কবি বলছি-
অামি অাত্মচিৎকারে বুক ফাটাই,
চাই শুধূমাত্র বেঁচে থাকতে একটি পথের দিশা,
দিশা বিহনে অাজকাল কলমের ছোয়ায়
কবিতা অার জীবন্ত হয়ে ওঠে না।

একে একে সবাই যায় চলে জীবনের মায়া সাঙ্গ করে
রক্তের বন্ধন হতে, প্রিয় বন্ধু ও সাধের প্রিয়তমা পর্যন্ত।
অাষ্টেপৃষ্টে অাটকে রাখার কতো না বাহানা,
তবু কেহ তার হাতখানি ছোয় না
কানের কাছে একটিবারের জন্য বলে না ভালবাসার কথা।

হলো না তবে  দেখা শেষ বারের জন্য
হলো না বলা হৃদয় নিংড়ানো অনুভুতি মালা,
হয়ত অদৃষ্টের লিখনে তুমি এসেছিলে
চুপিসারে অামার মধ্যেই থাকবে বলে।

অদেখাই হয়ত ছিল অামাদের নিয়তি
কবিতা! তোমার মধ্যে কতো ছন্দ খুঁজেছি!
তোমাকে কল্পানায় কত ছবি একেঁছি!

কবিতা! জানি তোমার অাজ নব্য কবিকে মনে ধরেছে
তার কাছে প্রতিক্ষণে নির্মম ভাবে ব্যবচ্ছেদ হবে।
নিষ্ঠুর ছেনীর অাঘতে অাবার স্তনবৃন্ত কেপে উঠবে,
শুষ্ক ঠোটে এক ফোটা প্রেম সুধার জন্য হাঁসফাঁস করবে,
ছলছল চোখের চাহনি অার চাপা গোঙ্গানিতে
তখন অামার কথা মনে পড়বে।

তবু হয়ত একদিন অামার প্রতিটি কথামালা
হারিয়ে যাবে বিস্মৃতির অতলে
তোমার এই অপ্রেমিক কবি
প্রেমিকের অন্তরালে থেকে ভালবেসে যাবে।
যতই অস্বাীকার করো
সে রইবে ঠিক তোমার মনের মাঝে
জানতে পারবেনা কোনদিন
কতটুকু ভালবাসা জমেছিল তার মনে।

তবু এ নাছোড়বান্দা মনটি বারংবার তৃনয়নে সুধায় তোমায়
কবিতা অামার কথা কি একবারের জন্য কি মনে পড়বে?
ভাববে একবারও কত অর্থহিন কথার অন্তরালে কতটা কষ্ট ছিল?
শত উপমিত সম্মধোনে তোমাকে কতখানি ভালবাসতাম?

হায়! চাপা অাবেগের অন্তঃপুরে ভালবাসার ক্রন্ধন
বাঁচালের স্বভাবে তোমার মন জয় করা চেষ্টা অাপ্রাণ।

একটা নিগুঢ় কথা কবিতা!
অামি নিভৃতচারী, বাঁচাল নই বা কোনদিন ছিলামও না
তোমার ছন্দময় প্রেমের জোয়ার পেতে ফুটিয়েছি কথামালা।
তবে বলো হে কবিতা!
কেন মৃদুভাষী কবির অাজ এই হলো দশা!

কবিতা তুমি এখন অন্যের শয্যায় জাপিত
তোমায় ইচ্ছে মতো ভাঙ্গবে অাবার গড়বে,
অদৃশ্য কাঁচের মত টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়বে,
তবু বাজারীর মতোই তার কাছে অাবার ফিরে যাবে।

তারপরও এইবুকে একটি প্রশ্ন বার বার ঘুরে-
অাচ্ছা, কবিতা তুমি এক মুহূর্তের জন্য হলেও কি অামার প্রেমে পরেছিলে?
এই হতভাগ্য কবির প্রেমকে একবারও কি ছন্দময় করতে ইচ্ছে হয়নি তোমার?
বেনারসির কথা বাদই দিলাম,
পূর্বপরিকল্পিত বিসর্জন দিবে বলে
বিধবা শাড়ি পড়তে মন চেয়েছিল কখনো?
নাকি এ অপদার্থ এতোটুকু সহানুভূতির যোগ্যতাও রাখেনি!

কবির দিশা!
এমন কি হয়নি কোন দিন যে
অামার কাছে একটু সময়ের জন্য অাসতে চেয়েছিলে?
অন্তত একটিবার হলেও
এই যুবকের মুখখানি দেখার সাধ জাগেনি মনে?
তবে না অাসাতে ভালই হলো,
হয়তো কবি অারো  বিভ্রান্ত হতো কবিতায় মজে!

কবিতা! কোন একদিন কি তুমি অামায় ডাকবে?
তুমি যদি একবার ডাকো তবে না এসে পারবো!
অার তুমি অাসতে চাইলেই মহাকালের খেয়া তোমায় অাসতে দিবে?
তুমি তো অাজন্ম তার অধিকারে,
এত শৃঙ্খল ভেঙ্গে অাসতে পারবে শুধু অামার কবিতা হতে?

সেটাও হয়তবা পারবে না তুমি,
তবে কয়েকফোটা জল ফেলতে পারবে-
অামার এই অসমাপ্ত কবিতার জন্য?

কবির দিশা!
তোমায় না পেলাম,
অন্তত তোমার ঐ চিবুক বেয়ে গড়ানো জলটুকু অামাকে দিবে?
তোমায় জলদিয়ে যে অামার এই দু চোখ ভেজাবো!

কথা দিচ্ছি-
অামার চোখে তোমার ঐ জলটুকু অাগলে রাখবো সারা জীবন!
পারলে অার একবার এসো সত্যিকারে, কবির দিশা হয়ে!
এ চোখের জলধারা মুছে দিতে!

কোন মন্তব্য নেই:

রঙ্গকাল

অামি মহাকাল

অামি অাকাশ অামি পাতাল অামি সুউচ্চ অামি পতিত। অামি নম্র অামি লৌহ অামি হার অামি বিজিত। অামি হাস্য অামি অশ্রু অামি মিলন অামি বিরহ। অাম...