মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০

নিজস্ব ভূমি


তোমার-আমার নিজস্ব ভূমি
দুঃখ তাড়ায় হেসে,

তুমি আর আমি এখানেই রবো
সারাবেলা ভালোবেসে।

সহসা


সহসাই সব বাধন ছিড়ে
ডুবে যাই গভীরে।

অব্যক্ত বুলি ছড়িয়ে-
আকাশের গভীরে।

বিচ্ছিন্ন বদ্বীপ

সহসা স্মৃতির কোণায় কখনো সখনো
ঐ নিষ্পাপ মুখগুলো আমাদের মুখোমুখি

ভেসে উঠে, ফিসফিস করে কি বলে ওরা?
হেসে ওঠে খিলখিলিয়ে!

আমরা কি এখনো তাই?
যেমনটা ছিলাম অাগে!

নাকি নিষ্ঠুর কালের গারদে
আমরা সবাই কয়েদী-
'বিচ্ছিন্ন বদ্বীপে'।

অনাবিল শান্তি


"সুখের মগডালে আমার ছোট্ট নীড়
তার সর্ব কোনায় ছোট্ট ছানার ছোয়া,

ক্লান্ত আমায় অার করে না ক্লান্তি
আমার নীড়ে আছে অনাবিল শান্তি।"
.

আত্মার টান


একটুখানি বিরতি এই কর্ম জীবনে-
হাফ ছেড়ে বাঁচার সেকি দৈব মানে!

কোন সে পুলক আমায় টানে ধীরে?
এটাই কি তবে বেঁচে থাকার মানে!

অসুখ

অালেয়ার পিছে ছুঁটে চলা অামি
তোমাদের উঠোন ধারায় ভিজবো।
মরচে ধরা দেহ হতে মুক্তি পাবো
বর্ষণে সিক্ত হয়ে হবে পুনঃজন্ম।

শাশ্বত পথ


এই সুখ, তো এই ক্লেশ
এই হাসি, তো এই কান্না।
এক চরিতের সিদ্ধিতে
আগে পিছে কত্তো বাধা!

হে মানব-
ছড়িয়ে দাও পথে পথে
যত আলো অাছে দেহে।

কালের বুকে এঁকে যাও-
তোমার প্রতিটি পদরেখা।

এটাই শাশ্বত অমোঘ পথ
এক জীবনের সকল মানে।
আহা, চির সৌম্যর নবজন্ম-
অন্তের এক উত্তম বিয়োগে!

স্মৃতি

শীত প্রভাতের কোমল রোদ্দুর-
শালিকের ডানায় ভেসে অাসে,
একমুঠো অনুভূতি ছড়িয়ে
সহসাই বিলীন হয় স্মৃতিতে।

নীল সমুদ্রের দ্বীপে

তুমি নীলাদ্রীকে ছুয়ে দিতেই সহসাই জল হেসে উঠবে খিলখিলিয়ে-
যেন সেই শৈশবের উচ্ছল হাসি আর অকৃত্রিম সরলতা!

হঠাৎই এক রাশিজল তোমার বুকে আছড়ে পড়তেই
শিহরিত হবে তোমার মন-
যেন সেই বয়ঃসন্ধিনকালে প্রথম ভাল লাগার অব্যক্ত অনুভূতি!


বাধভাঙ্গা উল্লাসে তলিয়ে জলকেলি খেলবে তোমার দেহ
যেন প্রথম যৌবনে কুড়িটি রক্তপদ্ম তুলে আনার গল্প!

গোধূলির অস্তগামী সূর্যের সবটুকু রক্তে তুমি হবে রঞ্জিত-
যেন বিচ্ছেদ কাতর অভিমানী প্রেমিকার নিরব অশ্রুধারা!

নীল সমুদ্রের দ্বীপে তুমি হবে বিচ্ছিন্ন
আবার আমায় ফিরে পেতে!

অনুভূতির ডায়াসপোরা!

ক্ষুদ্র দিবসের সায়হ্নে-
সকল অনুভূতির ডায়াসপোরা!
দক্ষিণা সুবাসের বিচ্ছেদ হয়
বিরহী আত্মা থমকে থাকে।
তবু বলে যাই-
ভাল থাকুক সবাই.....

মহাকবির 'বাংলাদেশ' কবিতা


হে মহানায়ক-
১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চ
টঙ্গীপাড়ায় এলো তুমি মানবতার কথা বলতে।
সহস্র বছরের বঞ্চিত বাঙ্গালির দুঃখে মুছতে
তুমি এলে মুক্তির ত্রাতা হয়ে।


হে যুগশ্রেষ্ঠ কবি-
সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর সবটুকু নিষ্পাপ ধারণ করে
তুমি উপহার দিলে মহান "বাংলাদেশ" কবিতা!
তোমার কীর্তির পথে ছিলনা ফুল কিংবা দিশা
সে পথে ছিল রক্ত, কারাগার, মৃত্যুর বিভীষিকা।

হে ধ্রপদী কবি-
কবিতায় তুমি বলেছ বিশ্ব মানবের মুক্তি
তোমার কবিতায় জেগে উঠল ঘুমন্ত জাতি।
কালের ধ্রুবতারা দেখেনি হিমালয়ের শির,
দেখেছে তোমার কবিতা, করেছে বিনম্র স্তুতি।

হে রাজনীতির কবি,
কবিতায় তুমি লিখলে "স্বদেশী আন্দোলন"
তুমি লিখলে অখন্ড-বাংলা, দাঙ্গার বিরূদ্ধচারন।
৫২ এর আন্দোলনে লিখলে কবিতার অভিধা।
একেএকে কবিতার দ্রোহে রচিত হলো-
জাতির মুক্তির সনদ,গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা।

হে স্বাধীনতার প্রতীক,
কবিতার শ্রেষ্ঠাংশে তুমি লিখলে-
দাবায় রাখতে পারবা না!
বজ্রকণ্ঠে কবিতায় বললে-
"এবারের সংগ্রাম, অামাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।"

হে মুক্তির কবি,
তুমি উপহার দিয়েছো মুক্তিযুদ্ধের মহাকাব্য
কাব্যের প্রচ্ছদে লিখেছ-
'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি'।
ভূমিকায় বলেছ-
চল্ চল্ চল্, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল, নিম্নে উতলা ধরণী-তল।
পরিবৃত্তে এঁকেছ-
অর্জিত মহান বিজয়ের 'লাল কেতন'।

হে ক্ষণজন্মা কবি,
কবিতার বিনাশে শকুনেরা করেছে তোমার অন্তর্ধান
৩২ নম্বরের সিঁড়ি বেয়ে রূধি নেমেছে বঙ্গোপসাগরে;
অসমাপ্ত কবিতার বুকে লঙ্ঘিছো তব মৃত্যুপ্রাণ
তবু হে কবি, তোমার রচিত "বাংলাদেশ" সূর্যের চেয়েও দীপ্যমান!

হে মহান পিতা,
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ তুমি, শ্রেষ্ঠ তোমার সৃষ্টি
সারাবিশ্বের বিস্ময় মানব, অমর মৃত্যুঞ্জয়ী।
ভূলোক দ্যূলোক গগন কাপিয়া উচ্চারিত নাম
হে বঙ্গবীর! উদ্ধত শির! শেখ মুজিবুর রহমান!

মুজিবের নামে শপথ-
বাংলাদেশ কবিতা মহাবিশ্ব করিবে জয়
বিশ্ব-সমাজ রইবে চেয়ে অবাক বিষ্ময়।
ধরণীর বুকে রচিত হবে-মুজিব সন্তান শ্রেষ্ঠ
সেটাই হবে অসমাপ্ত কবিতার সুন্দর সমাপ্ত।
শ্রেষ্ঠদের শ্রেষ্ঠ আসনে থাকবে বঙ্গবন্ধু তুমি,
মহাকাল প্রীতিতে জপবে তোমার কীর্তিনামা।
বিশ্ববাসী উর্ধ্ব করিবে মহান পিতার নিশান
সর্বদলের মিছিলে থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম।
মুজিব মানে স্বাধীনতা, মুজিব মানে মানবতা
মুজিব মানে প্রগতিশীল, মুজিব মানে সমতা।
মুজিব মানে বাংলাদেশ, মুজিব মানে বিশ্বনেতা
মহাকাল স্বরিবে তোমার 'বাংলাদেশ' কবিতা।

হে মহামানব,
তুমি ইতিহাস, তুমি বিশ্ব ঐতিহ্য, মানবতার তোরণ
অবিনশ্বর তুমি মহাকালের বুকে-
তুমি ছিলে, তুমি আছ, তুমি থাকবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু!

করোনা



চিরচেনা শহরের ধূসর রং-
নির্লিপ্ত সকল মায়ার বাধন।
তবু বয়ে যায় জীবন তরী-
মুখরিত জীবনের আহবান।

জীবন



এক জীবনের ঢের উমেদ
বেঁচে থাকে মানব আত্মায়।
ছুটতে চায় সে ভূলোক-দ্যুলোক
তবু শৃঙ্খলে সবই মায়ায়।
কাম্য, তোমায় কত্তো অনুরক্তি!
তুমি কখনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি-
আবার কখনো বা নিরন্তর অপূর্ণতা,
অথবা কষ্টে-সৃষ্টের অমোঘ সফলতা।
জীবন, তুমি কতো মধুর!
শাশ্বত চক্রে প্রিয় সুর।
বর্তমানে তুমি সুন্দরতম
স্মৃতিতে তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ।
অনাগতে তুমি প্রাণ সঞ্জীবনী
আহারে জীবন- "তোমায় ভালবাসি"!

শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯

মুসলিম জঙ্গি বনাম ইসলাম বনাম ভূরাজনীতি

শ্রীলঙ্কায় বিগত ২১.০৪.২০১৯ তারিখ, রোববার গির্জা, হোটেলসহ আটটি স্থানে নৃশংস বোমা হামলায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ২৫৩–এ পৌঁছেছে, আহত হয়েছে অন্তত পাঁচ শতাধিক। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ও তাদের উপদল ন্যাশনাল তৌহিদী জামায়াত, জামিয়াতুল মিল্লাতু ইবরাহিম ঘটনার তিন দিন পর তাদের মুখপাত্র আমাকের মাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করেছে। বরাবরের মত একটি নির্দিষ্ট অক্ষ ঘটনাটি আইএস দ্বারা সংগঠিত বলে বিশ্ববাসীকে মুসলিম মানেই সন্ত্রাস নামটি কায়েম করার সুদূরপ্রসারী চেষ্টা চলছে এবং বিশ্ববাসীকে বোকা বানাতে চাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ‘ইসলামী(নামধারী) শাসনব্যবস্থা’ কায়েমের আদর্শে মত্ত আইএস যে ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সৃষ্টি তা এখন অজানা নয়। নামধারী মুসলমান (খারেজী) জঙ্গিগোষ্ঠীর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রত্যেকেই মোসাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আইএস-সহ যত মুসলিম জঙ্গি সংগঠন আছে এদের মূল নেতৃত্ব রয়েছে কোন না কোন খারেজী অনুসারী। জ্ঞাতার্থেঃ এই খারেজীরা ছিল একটি ইহুদি সম্প্রদায় যারা ইসলামের ঊষালগ্নে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং পরবর্তীকালে মুসলমান ও অমুসলিম উভয়কেই হত্যা করতে থাকে৷ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় হযরত ওসমান (রাঃ) ও হযরত আলি (রাঃ) কে জাহরান হাশিম এবং আবু মোহাম্মেদের মতো খারেজীরাই হত্যা করে।
চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে, দুনিয়াব্যাপী ‘ইসলামী খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে স্বঘোষিত খলিফা ও সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা খলিফা আবুবকর আল বাগদাদি মুসলমান নন। তিনি একজন ইহুদি। তার আসল নাম আকা ইলিয়ট শিমন। আইএস প্রধান বাগদাদিকে ৭ বছর ট্রেনিং দিয়েছে ইজরায়েল। ইজরায়েল গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদে কর্মরত এক ইহুদি নারী গুপ্তচরকে বিয়ে করেছিল। বাগদাদির পরিচয় সম্পর্কে ছড়ানো হয়েছে তিনি ১৯৭১ সালের ২৮ জুলাই ইরাকের সামারায় জম্মগ্রহণ করেন। বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের সময় সামারায় ছদ্মবেশে একটি মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন করেন বাগদাদি। পরে তিনি ‘আমিরে দায়েশ’ উপাধি গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে, ২০০৪ সাল থেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে আবুবকর আল বাগদাদি।
২০১৩ সালের জুনে সুসংগঠিত এ জঙ্গিগোষ্ঠীটি ‘ইসলামিক স্টেট’ নামে আত্মপ্রকাশের আগে বাগদাদী যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের সিনিয়র সিনেটর ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জন ম্যাককেইনের সঙ্গে তার অর্ধডজন শীর্ষ জঙ্গিসহ গোপন বৈঠক করেন। তখন বাগদাদির মুখে লম্বা দাড়ি ছিল না। ওই বৈঠকে বাগদাদির সহযোগী আইএসের শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ নূরও উপস্থিত ছিলেন। গোড়ার দিকের ওই গোপন বৈঠকগুলোতে মোসাদের বেশ কয়েকজন সদস্য ও আইএসপ্রধান বাগদাদি উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজ ও সিএনএনের একটি ভিডিও স্নাপশটে এ ছবির ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া গেছে।অতপর ২০১৩ সালে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ দখলে নিয়ে ইসলামিক স্টেট নাম দিয়ে খেলাফত ঘোষণা করেন বাগদাদি (সুত্রঃ রেডিও আজিয়াল ডটকম, সোশিও-ইকোনমিক হিস্ট্রি, গ্লোবাল রিসার্চ, এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) গোপন নথি, পলিটিসাইট ডটকম, উইকিলিক্স, আমেরিকান ফ্রি প্রেস।)।
এটপরও অনেকে আইএস বলতে মুসলিমদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করেন বা প্রপোগন্ডা চালান তাদের নিকট নিন্মোক্ত প্রশ্নসমূহঃ-
(০১) যেখানে সারা পৃথিবীতে ইসলামের নামে বোমা হামলা চালাচ্ছে আইএস, অথচ মসজিসমূহকে নাইট ক্লাব বানানর পরও জানালার পাশে "ইজরায়েল"কে তারা কেন হামলা করে না?
(০২) আইএস যদি সত্যিই মুসলমানদের সৃষ্টি হয় তবে তারা ফিলিস্থিনিদের পক্ষে তারা কেন তৎপর নয়?
(০৩) আমেরিকার কর্তৃক জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণার পরও তারা কেন সে দেশের উপর হামলা করে না?
(০৪) আইএস জঙ্গিরা যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের হাজার হাজার মসজিদ মাদ্রাসা ধ্বংস করে শেষ করে ফেলেছে সেখানে কেন তারা একটাও পুনর্নির্মাণ করেনি?
(০৫) মুসলিমদের জঙ্গি সাজিয়ে কারা ট্রিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বাণিজ্যসহ আরব বিশ্বের তেল-সোনা কে বা কারা চুরি করছে এবং অপছন্দের ব্যাক্তিদের বেছে বেছে ক্ষমতাচ্যুত করেছে বা করছে?
(০৬) স্যামুয়েল হান্টিংটনের দ্য ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশন থিওরীর আগে কোন মুসলমানের আত্মঘাতি বোমা হামলার প্রয়োজন হয়নি কেনো?
(০৭) যেখানে শ্রীলঙ্কায় হামলার ১০দিন আগে সিআইএ ও "র" সতর্ক করে ছিল এবং হামলা কারা করবে তাও বলে দিল তবুও তার বিরুদ্ধে কেন চুপ ছিল শ্রীলংকা সরকার (উল্লেখ্য পুলওয়ামা হামলা, হোটেল তাজ হামলা, মুম্বাই হামলা, রাজিব গান্ধি হত্যা, ইন্দিরা গান্ধি হত্যা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ব্যাপারে ভারত কোনও দিনই নিজে দেশের কোন হামলার ব্যাপারে আগাম জানতে পারেনি)।
(০৮) ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরই কেন আইএস ফ্রান্সে দুইবার সন্ত্রাসী হামলা চালালো?
(০৯) জাপান ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরই কেন দুই জাপানি অপহৃত হলো ও আইএস তাদের হত্যা করলো?
(১০) ইন্দোনেশিয়া ফিলিস্তিনের গাজায় একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার পরই কেন আইএস জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম এই মুসলিম রাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালালো?
(১১) ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বেলজিয়াম একটি বৈঠকের আয়োজন করার পরই কেন আইএস ইউরোপের এই দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালালো?
(১২) রাশিয়ার সহায়তায় বাংলাদেশ পরমাণু প্রকল্প থেকে ২০১৬ সালের ২১ জুন ‘স্থান সনদ’ বা সাইট লাইসেন্স পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে কেন গুলশানে হামলা হলো ফলশ্রুতিতে আর্ন্তজাতিক দালাল মিডিয়া প্রচার করলো বাংলাদেশ একটি জঙ্গী দেশ যেখানে পরমাণু প্রকল্প ঝুকিপূর্ণ?
(১৩) শ্রীলঙ্কার এই হামলায় তার প্রতিবেশী দেশটি তাদের নির্বাচনে ইসলাম বিদ্বেষী রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ইতমধ্যে ব্যবহার করা শুরু করেছে, এর অন্তরালে কে বা কারা রয়েছে?
এবার প্রশ্নের উত্তরসমূহ নিজে নিজে অনুধাবন করলে বুঝা যায় ঐসব ঘটনার অন্তরালে প্রকৃত ঘটনা কি?
সুতরাং জামাতে দন্ডায়মান মুখোশধারী জুতা চোর যেমন কখনোই নামাজী হতে পারে না তেমনি নামাজীর ভান ধরে দাড়ি পাঞ্জাবি পড়লেই মুসলিম নয়। অথচ যুগে যুগে ধর্মের মোড়কে ইসলামকে কুলশিত করার জন্য খারেজীরা বিশ্ব শান্তি ও মানবতার জীবনাদর্শ তথা ইসলামকে সমগ্র বিশ্বের সামনে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভুলন্ঠিত ও কলঙ্কিত করে চলছে। প্রকৃতপক্ষে আইএসের সকল সদস্য ও সদস্যা আইএসে যোগ দেওয়ার আগে ইসলাম ধর্মের অনুসারী মানে মুসলিমই থাকে। কিছু নামধারী, মূর্খ, উগ্র ও স্বল্পবিদ্বান মুসলমান তাদের পাঁতা পাঁদে পা দিচ্ছে এবং ইসলামের অপব্যাখার শিকার হয়ে নিরিহ মানুষ হত্যায় লিপ্ত হচ্ছে। মাঝখানে বলির পাঠা হচ্ছে বাকী সমগ্র মুসলমানেরা আর সাধারণ জনগণ। কারন এই সকল মুসলিমগুলো যখন আইএস ও তথাকথিত অন্যান্য জঙ্গি দলে যোগ দেয় তখন তার দায়ভার অবধারিতভাবে ঐ সমগ্র মুসলমানদের পড়ে। এইভাবে বিশ্বব্যাপী ইসলামভীতি বাড়ার পাশাপাশি কলঙ্কিত হচ্ছে ইসলাম ধর্ম।
#ইসলামে_অমুসলিমদের_প্রতি_দায়বদ্ধতাঃ
প্রাচীনকাল হতেই ধর্মসমূহ কোনদিন একে অন্যের সহাবস্হানে ছিলো না, কোনদিন থাকবেও না। কারন, ধর্মের ভিত্তি হলো বিশ্বাস, কোন লজিক নয়। সহ-অবস্হানের জন্য সামান্য হলেও লজিক্যাল মিল ও লজিক্যাল কারণ থাকতে হয় যা একেবারেই অনুপস্থিত। প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা বিশ্বাস করে যে তারা "সত্য পথে" রয়েছে এবং অন্যসকল ধর্মের লোকেরা "ভ্রান্ত পথে" আছে। ভ্রান্ত ও সত্য লজিক্যালী একমুখী নয়, বিপরিত মুখী। এতদসত্ত্বেও ইসলামে আল্লাহ তা‘আলা ঈমানের দাবিদার প্রতিটি মুসলিমকে নির্দেশ দিয়েছেন পরমতসহিঞ্চুতা ও পরধর্মের বা ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে। উদাহরণস্বরূপঃ
#আল_কুরআনের_আলোকে
(০১) আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'য়ালা এরশাদ করেন- “তারা আল্লাহ তা‘আলার বদলে যাদের ডাকে, তাদের তোমরা কখনো গালি দিয়ো না, নইলে তারাও শত্রুতার কারণে না জেনে আল্লাহ তা‘আলাকেও গালি দেবে, আমি প্রত্যেক জাতির কাছেই তাদের কার্যকলাপ সুশোভনীয় করে রেখেছি, অতঃপর সবাইকে একদিন তার মালিকের কাছে ফিরে যেতে হবে, তারপর তিনি তাদের বলে দেবেন, তারা দুনিয়ার জীবনে কে কী কাজ করে এসেছে {সূরা আল আন‘আম- ১০৮}।“
(০২)আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'য়ালা এরশাদ করেন- "ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন [ সুরা মুমতাহিনা -৮]।"
(০৩) আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'য়ালা এরশাদ করেন- "যে ব্যক্তি যে কোন মানুষকে হত্যা করার কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ (করার শাস্তি বিধান) ছাড়া (অন্য কোনো কারণে) কেউ যদি কাউকে হত্যা করে, সে যেন গোটা মানব জাতিকেই হত্যা করলো; (আবার এমনিভাবে) যদি কেউ একজনের প্রাণ রক্ষা করে তবে সে যেন গোটা মানব জাতিকেই বাঁচিয়ে দিলো (সূরা মায়িদা-৩২)।"
#সহীহ_হাদীসের_অালোকে
(০১) মুওতার যুদ্ধে রওনার প্রাক্কালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাহিনীকে নির্দেশ দেন-"তোমরা কোনো নারীকে হত্যা করবে না, অসহায় কোনো শিশুকেও না; আর না অক্ষম বৃদ্ধকে। আর কোনো গাছ উপড়াবে না, কোনো খেজুর গাছ জ্বালিয়ে দেবে না। আর কোনো গৃহও ধ্বংস করবে না [মুসলিম : ১৭৩১]।"
(০২) একাধিক সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- "সাবধান! যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার অধিকার খর্ব করে, তার ক্ষমতার বাইরে কষ্ট দেয় এবং তার কোনো বস্তু জোরপূর্বক নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার পক্ষে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ উত্থাপন করব [আবূ দাঊদ : ৩০৫২]।"
(০৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ "যে মুসলিম কর্তৃক নিরাপত্তা প্রাপ্ত কোনো অমুসলিমকে হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ তার ঘ্রাণ পাওয়া যায় চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে [বুখারী : ৩১৬৬]।"
(০৪)রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে প্রথম বিচার করা হবে রক্তপাত সম্পর্কে (বুখারী,মুসলিম : ৩১৭৮)।
#ধর্মের_অন্তরালে_ভূরাজনীতি
জঙ্গি শব্দটা ভূ-রাজনীতিক এবং কৌশলগত শব্দ, যার মূলে রয়েছে ষড়যন্ত্রকারীদের অর্থনীতি পোক্ত করা এবং মুসলিমদের বলির পাঠা বানিয়ে ফায়দা লুটা। শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার সম্ভাব্য কারনসমূহ হলোঃ
ক) চীনা বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, স্টিং অব পালর্স বা মুক্তা’র মালার মাধ্যমে সাড়া বিশ্বকে সংযুক্ত করতে চাচ্ছে যার মুলে আছে দক্ষিণ এশিয়া। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, শ্রীলংকা আছে এর মধ্যে। চীন মায়ানমারের রাখাইন, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান এবং শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দরে চীন বিনিয়োগ করেছে। খেয়াল করলে দেখা যায় রাখাইনে রোহিঙ্গা হামলা হয়েছে, পাকিস্তানে বেলুচিস্তানে হামলা হয়েছে। আর এখন হল শ্রীলংকায়। এর মানে চীনা বিরোধী অক্ষ চাচ্ছেনা চীন দক্ষিণ এশিয়ায় তার আধিপত্য বিস্তার করুক। আগামী ২৭শে এপ্রিল, ২০১৯ শুরু হতে যাওয়া "ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড" সম্মেলনে শ্রীলংকার হামলা একটি বিশেষ বার্তা দিবে, তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়।
খ) শ্রীলংকার হামলায় মুসলমানকে জড়ানোর কারণও খুব সোজা। একদিকে মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসেবে সাব্যস্থ করা, অন্যদিকে মুসলমানদের চাপে ফেলে ফায়দা হাসিল করা। কারন শ্রীলংকা ২০১৮ সালে ট্যুরিজম থেকে সাড়ে চার বিলিয়নের মত আয় করে যা ইতমধ্যে আশপাশের বৃহৎদেশ গুলোর মাথাব্যাথার কারন। এই দাবীকে সমর্থন করে আইএস কর্তৃক হোটেলে বিদেশীদের হত্যাকরন।
গ) শ্রীলংকার চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলেছেন গোয়েন্দারা সতর্কবার্তা গোপন করেছেন। আর ভারতপন্থী প্রধানমন্ত্রী বিক্রামাসিংহে বলছেন তাকে কিছুই জানানো হয়নি। বাস্তবতা বলছে শ্রীলংকার ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিপরীতমুখী রাজনীতিবিদ, প্রসাশন ও পুলিশ ইচ্ছে করে উগ্রবাদী খারেজী জঙ্গিদের হত্যালীলার সুযোগ করে দিয়েছে যা দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দলে নির্দেশ করে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নিজেদের পছন্দের শাসক (পড়ুন গোলাম) বসাতে না পারলে মোড়লরা বিভিন্ন গোষ্টির উত্থান ঘটায় যারা সেই দেশে এরকম ঘৃণিত তৎপরতা চালাতে শুরু করে। টুইটার প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষনিক টুইট এবং নির্বাচনের কাজে শ্রীলঙ্কার ঘটনা ব্যবহার করার ভিতর দিয়ে এই সত্যটি উদ্ভাসিত।
মূলতঃ উপরোক্ত বিষয়বলী সাম্রাজ্যবাদীদের তৈরী সুদূরপ্রসারী পদ্ধতি যার মূলে রয়েছে চীনা বিরোধী অক্ষের মাস্টারপ্ল্যানারগণ। তারা মূলত নামধারী মুসলিমদের দিয়ে আল কায়দা, তালেবান ও আইএস ছদ্মবেশে সারবিশ্বে ইসলামোফোবিয়ার বিষ সুনিপুণভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এজন্য আমেরিকা নিয়েছে ‘পিভট ট্যু এশিয়া’ এবং আমেরিকার সহযোগী মোদির সরকার নিয়েছে ‘লুক ইস্ট’ পলিসি। চলছে দুই অক্ষের মধ্যে প্রক্সি ওয়্যার বা ছায়া যুদ্ধ। স্বার্থ নিয়ে যুদ্ধ করবে ঐ দুই অক্ষ আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই অঞ্চলের মানুষ, ঠিক যেভাবে আমেরিকা-রাশিয়ার প্রক্সি ওয়্যারে ধ্বংস হয়েছে আফগানিস্তান।
এখন কে বেনিফিশিয়ারি তা মেলানো যাক, এই ঘটনায় কার সবচেয়ে বেশি লাভ হল? আপতদৃষ্টিতে চীনের মুক্তার মালায় ক্ষত সৃষ্টির মাধ্যমে চীনাবিরোধী অক্ষ এই মুহূর্তে কিছুটা এগিয়ে তা খালি চোখেই বুঝা যায়।
#সবিশেষঃ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রীলঙ্কার সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে বলেছেন, "সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের কোনো দেশ ও ধর্ম নেই। জঙ্গি জঙ্গিই, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। এদের কোনো ধর্ম নেই। নেই কোনো দেশ-কাল-পাত্র।" আশংকার ব্যাপার এই যে সহসাই আগামী মে ০৬, ২০১৯ তারিখে পার্শ্ববর্তী দেশটির ফরেন সেক্রেটারি জরুরী সফরে ঢাকা আসছেন । তাদের উদ্দেশ্যও একই- বাংলাদেশকে ‘বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ থেকে বিরত রাখা। তবে মনে হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কূটনীতি ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কাছে তারা ব্যর্থ হবে! তাহলে কি পরবর্তী টার্গেট বাংলাদেশ? সৃষ্টিকর্তার নিকট একটাই প্রার্থনা; ভূ-রাজনীতির এই খেলায় বাংলাদেশ বেঁচে গেলেই হবে।

শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯

শুভ নববর্ষ

অগ্নি স্নানে শুদ্ধ করি
মম হৃদয় হেরী।
বৈশাখের ঐ রুদ্র ঝড়ে
ভাসাই মনের কালি।
মঙ্গল জলে শুচি হই
ফেলে পাপের ঝুড়ি।
মম বাংলা হিয়ায় একতারা সুর
আমি গর্বিত বাঙ্গলী।



প্রভাতী পান্তা ভাতে কাচা লঙ্কা
সরষে ইলিশের ঘ্রাণে মাতোয়ারা।
বাঙ্গলীর ঘরে ঘরে পহেলার প্রাণ
ধুয়ে মুছে সাফ হয় মনের ঝঞ্জাল।

শুভ নববর্ষ ।

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯

লোহিত জ্যোতি


গোধূলির বেলায় পানকৌড়ি
লাল দিগন্তের নিড়ে ফেরে।
বক শালিকের হিরণ দোলায়
রোদের ঝিলিক হেসে ওঠে।

ফুলকুড়ির ঐ নাড়ীর টানে
মেঘের বুকে কেতন ওঠে।
প্রভাত ফেরীর দীপ্ত রংয়ে
ফুল কাননে স্বপন উড়ে।

খোয়াবি চিত্তের কষ্টি পাথরে
মুক্তি তোরণে কিঙ্কর ভেঙ্গে।
অরুণের ডানায় রোদ্র মেখে
সংগ্রামে মুখর বাঙ্গালী প্রাণে।

শৃঙ্খল ভাঙ্গার বিল্পবী ডাকে
শোষিত মজলুম জেগে ওঠে।
বাংলার মায়ের শপথ নিয়ে
স্বাধীনতার প্রাণ গর্জে ওঠে।

বাংলা মায়ের ধুলো মাটি বায়ু
বিস্তৃত ঐ পদ্মা মেঘনা যমুনা।
মুক্তির জয়গানে মুখরিত রব
টেকনাফ হতে তেঁতুলিয়া।

অতঃপর-
হায়েনার বিষাক্ত দন্ত লাল
বাংলা রমনীর গতর লাল।
হায়েনার তাজা বুলেট লাল
দামাল ছেলের জামা লাল।

চির সবুজের বুক ফুটো হয়
ওরা সবাই ছোটে মুক্ত পানে।
রক্তস্নাত মেঠো পথ পেড়িয়ে
আছড়ে পরে বঙ্গোপসাগরে।

চিরসবুজের লাল তিলক হতে
গলগলিয়ে বের হয়ে আসে মুক্তি।
লোনাজলে টকটকে লহু মিশে
সমুদ্র ভেদে ওঠে লোহিত জ্যোতি।

বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯

ম্যাগনাম ওপাস

৭ই মার্চ, ৩টা ২০ মিনিট ফাগুনের পড়ন্ত দুপুর-
মহাকালবাপী হোঁচট খাওয়া বিরামহীন
পদ্মা মেঘনা যমুনার শোষিত বাঙ্গালি,
রমনার লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের বিছানো পথ মাড়িয়ে
সবাই রেসকোর্সে, সবার মহানায়কের প্রতীক্ষা।

মহানায়ক সেদিন সব মহাকাল ধারণ করে
সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি, হাতকাটা কালো কোটে
আর হৃদয়ে বাঙালির স্বাধীনতা সনদে সিল মেরে
দৃপ্তপায়ে উঠে এলেন জনতার মুক্তির মঞ্চে।

স্বপ্নদ্রষ্টা মহাকবি ধীরে ধীরে আবৃতি করলেন-
‘ভাইয়েরা আমার’, গাঢ় হতে গাঢ়ো হলো কবিতা।
কণ্ঠে কখনো ক্রোধ, কখনো বেদনার কান্না,
কখনো কবি সমাহিত শান্ত, অথচ দৃঢ়তা।

কবির কণ্ঠে কখনো আবেগ, কখনো শিহরণ
কখনো ছড়াল রোমাঞ্চ, ঘুম ভাঙ্গানি উদ্দীপন।
বলিষ্ঠ কবির হৃদয় থেকে উৎসারিত দীপ্ত কণ্ঠে
১৯ মিনিটে এক হাজার ১০৮টি শব্দ উচ্চারণ।

মহান কবি বজ্রকণ্ঠে আবৃতি করেন-
'তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।
মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব-
এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জয় বাংলা।'

কবি আবৃতি করলেন তাঁরই সৃষ্ট ম্যাগনাম ওপাস
তাঁর নান্দনিকতায় প্রতিটি সুর, তাল, লয় হলো ছন্দ।
মুহূর্তে জন্ম নিলো বাংলা সাহিত্যের অনন্য সৃষ্টি
বাঙালির চোখে জ্বলে ওঠে স্বপ্নের অমর জ্যোতি।

আকাশ কাঁপানো মুক্ত স্টেনগানের ঠাঁ ঠাঁ আওয়াজ
রাজপথে লাল রঙের ছোপ, রক্তাক্ত কৃষ্ণচূড়ার মাস।
সমস্বরে গর্জে ওঠে ফাগুনি আগুন ও লাল কৃষ্ণচূড়া
কাব্যের নিখুঁত বুননে হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সূচনা।

বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

হতভাগ্য প্যান্ডোরা

তুমি হেফাস্টাসের অপূর্ব সেই চির ভাস্কর্য
আফ্রদিতির নারী সৌন্দর্যের স্বর্গীয় বিমূর্ত।
তুমি এথেনার মিহি মসলিনের রুপালি থান
তুমি জিউসের হতে অনুগৃহীত অমূল্য প্রাণ।

অ্যাপোলোর কণ্ঠে তুমি সঙ্গীতের মূর্ছনা।
হারমিসের নিত্য রূপে আবেগী প্ররোচনা।

রূপের মুক্তো গলে,  অঙ্গে বাহারি  পোশাক
তোমায় দেখে  মর্ত্য- দেব্য সকলই হতবাক।
শীর্ষে তোমার স্বর্ণমুকুট, গ্রীবায় পুষ্প মালা
বিধাতার সৃষ্ট প্রথম মানবী, তুমি প্যান্ডোরা।


হে কুমারী প্যান্ডোরা-

কার ইশারায় এলে ধরায়  লজ্জাবতী কিশোরী?
ঐ ভুবনময়ী রূপে লুকিয়ে থাকে কার অভিসন্ধি ?
ঐ ঘোমটা টানা উজ্জল মুখে কার কূটচালের সিদ্ধি ?
এপিমিথিউস কেন হয়ে পড়ল ঐ রূপের বন্দী ?


দেব আর মানবীর মিলনে সৃষ্টি মানব  সংসার
পৃথিবীতে নেমে এল সকল স্বর্গ-সুখের দুয়ার
পিতা কন্যাকে তত্ত্বে  দিলো  কি 'অদ্ভুত বাক্স'!
চাবি সহিত চিরকুট  ‘কখনো খুলো না যেন!'

নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানবের চিরন্তন আকর্ষণ
নিয়ম ভাঙ্গাই যেনো পৃথিবীর একমাত্র নিয়ম।
পিতার কূটকৌশলে কৌতুহলের খুলল ঝাঁপি 
ব্যাপন হোল ধরার বুকে সমস্ত অশুভ শক্তি।

লোভ-লালসা-ঈর্ষা-ব্যাধি-ঘৃণা-ক্রোধ-জরা-হতাশা
ছড়ায় সারা ধরণীতে, মানবের দেহে বাধে বাসা।
ক্রন্দন-জরায় খুলে বাক্স আশাবিহীন প্যান্ডোরা
এবার উজ্জ্বল হাসি দিয়ে বেরুয় সবচেয়ে শুভতা।

সকল অশুভ আর শুভতায় বেঁচে রইল প্যান্ডোরা
ঐ শুভতায় প্রতিটি মানবের বুকে বেঁচে থাকে আশা ।
প্যানডোরা তোমার নারী সুলভ একটু কৌতূহলে
সারা অশুভের ভর আজো  মানব জাতির কাঁধে।

জিউসের ফাঁদে মানবের অনিষ্ট তবু তিনি  অধরা
নিছক কৌতূহলে 'অনিষ্টের মা' বেচারি প্যানডোরা!
প্যানডোরার বাক্স নারী চির অশুভের কৌতূহল কি?
নাকি পুরুষকেন্দ্রিক অতিমাত্রিক কূটচালের সৃষ্টি ?

হায় শ্বাশ্বত প্রথম হতভাগী নারী প্যান্ডোরা!
তুমি করোনি কখনো পুরুষের  বিরুদ্ধাচরণ।
তুমি ছিলে বিশ্বস্রষ্টার দেওয়া সকলের উপহার, 
তবু পুরুষতন্ত্র করলো তোমায় অবজ্ঞার  দুয়ার।

মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

আমাদের বসুন্ধরা


হে প্রিয় নবীন অভিরুপ
পুর্বপুরুষের অনন্য সৃষ্টি।
অনুরাগে রেখো আচ্ছন্ন 
বিমোহে আশার বসতি।

তার ঘুম আস্যের হাসির বাঁকে
আমার হৃদয় চেতন হেঁলেদুঁলে। 
আনন্দময়ীর আগমনে-
কি আনন্দ এ সংসারে!

মায়ার বাধন

আমার এই অস্তিত্বের পথ মাড়িয়ে
স্মৃতির গল্পরা সবাই ধূলোয় মিশে।
কিছু সমন্বয় ও অনিশ্চিত হিসাবে
মহাকালের বুকে সবাই যায় ক্ষয়ে।

অবিরাম আমি প্রাপ্তির অঙ্ক কসি
কখনোবা জীবনের হিসাব মিলে।
অথবা প্রভেদে চাওয়ার সাঙ্গ হয়
ইচ্ছেগুলো মিশে যায় মহাকালে।

তবু এই পরিভ্রমণে কত্তো যে সুখ
পাওয়া না পাওয়ার ব্যাবধানে।
কপোত যুগলের উৎকৃষ্ট নীড়
প্রিয় সংসার আর মায়ার বাধনে।

বেশঃ মনোরম এই বেঁচে থাকা
আমি ও আমাদের সংসারে!

শিশু জাতিস্মর

শিশু সুখ, শিশু মুখ
শিশু স্বর্গ, শিশু সত্য।

শিশু আদি, শিশু অনন্ত
শিশু স্নিগ্ধ, শিশু শ্বাশত।

শিশু কোমল, শিশু স্পষ্ট
শিশু সুন্দর, শিশু মোহ
শিশু শ্বর, শিশু জাতিস্মর।

সে আসবে বলে!

পদ্মকলির যৌবনা দেহ জলে মিশে-
ধুয়ে যায় বৃথা নপুংসক নিথর জলে
তার দেহবৃন্তের প্রতিটি পাপড়ি অাজ
অনাদরে এলোপাথাড়ির অবেলায়।
..........................................
এদিকে-
অরুণের এক পশলা তরুণ মেঘ
হংসবলাকার সফেদ ডানায় চড়ে
পাড়ি দেয় ঝিনুকের মালার দেশ
খুঁজে ফিরে আরধ্য নীলকমলিনী।
..........................................


সহসা, অরুণের কানে ভেসে অাসে-
এই এই এই, এই তো আমি----

নির্লিপ্ত অপরাহ্ন কে ডাকে ঐ-
শুনে সে কার আহ্বান?
ধরিত্রীর সকল রং কে আসে হায়!
এই চেতনায় কে মিশে যায়?
কে সে উদগ্রীব ডাকে আমায়?
কে ভাসায় আমায় কোন ঠিকানায়?
..........................................

পদ্মকলির ইন্দ্রিকোণে তরুণ মেঘের ফুঁ
উষ্ণ হয়ে অঝোরে ঝরে তার দেহবৃন্তে
জলের পরাগায়ণে সে আর মেঘ বৃষ্টি-
ধুয়ে মুছে সাফ হয় দুপ্রাণের অাকুতি।
..........................................

ধাঁ করে তরুণ মেঘ ধূম্র হয়
হংসবলাকার পাখনায় মেলে
পৌঁছে মেঘ বাড়ির ঠিকানায়।
এদিকে কমলিনীর প্রতীক্ষা-
কখন সে আসবে বলে!

সব কুসুম যদি যায় ঝরে!

আবির তুই সবি কখন?
বল মায় দিব্যি করে।
শেষ বেলায় লাভ কি বল-
সব কুসুম যদি যায় ঝরে!

বির এসে বলে তাঁকে-
কই ছিলি তুই কোন বাঁকে?
ছুতে তোর সিঁথির কোণ-
কত রাত বিরহে কাটে!

-ঃঅপদার্থের অমনিবাসঃ-


আচার্য কলিপের হাজার বছরের পুরোনো জ্যোতিষ বিদ্যায়
তন্ন তন্ন করে খুজেছি আমাদের আহুত ভবিষ্যৎ।
এনাক্সিমেন্ডারের সৃষ্টিতত্বের পরিনত অনুরাগে ভেসে বেড়াই নিরন্ত
তবু অদৃষ্টের মহাকাল কেমন যেন রাহুগ্রহে আচ্ছন্ন।

কল্পনার অন্তিম ঠিকানায় আশ্রয় খুজতে খুজতে
একতরফা মাত্রায় ঘুরছি কোপার্নিকাস নভোমন্ডলে।
দমের অণুবল খুজতে গ্যালিলিও-র বলবিদ্যা করেছি কাটাছেরা
তবু লবডঙ্কার অন্তঃকরণে অন্তঃকলহ, কি যে পাওয়ার নেশা!

ভুঁইফোঁড়ের অহেতুক কর্ষে নিউনের মহাকর্ষ খুজে পাইনি
গতিসূত্রের অনিঃশেষ নিয়মে খর্খরে মননের হয়নি গতি।
উপলব্ধ চৈতন্যের পরম ভর আর আইনিস্টেনর আপেক্ষিকতা
যেন রাম আর ঘটিরাম; কি যে এক লেজেগোবরে অবস্থা!

এডুইন হাবলের দূরবীনে দেখেছি অস্থিত আকাশগঙ্গা, নিহারিকা
প্লাঙ্কের ফোটন তত্ত্বে পাইনি অনুভবের বিকিরিত সীমারেখা।
সাসকিন্ডের 'তার-তত্বে' কৃষ্ণ গহ্বরের গভীরতা যতটা শাশ্বতে
আদমীর হৃদয়ের গভীরতা বুঝতে আদম ততটাই নটঘটে।

মহাকালের পলক দৃশ্যে রঙ্গমঞ্চের চোতা নৃত্য
অরুণ মিলায় ইশ্বরি কণায় সৃষ্টি-ধ্বংসের নাট্য।
আত্মা দিকবিদিক শুন্য হকিংয়ের মহাবিস্ফোরণে
মহাজাগতিকের স্পৃহায় সে হারায় দূর হতে বহুদূরে।

-: কবিতার প্যারাডক্স :-

তুমি আছ, আমি আছি, আমরা আছি
অথবা কেউ নেই, সবাই শূন্যে
কালের প্রতিটি পাতা হয়তোবা সাজানো 
সৃষ্টধরের নিপুণ তুলির আঁচরে।

এই ধরো ত্রিমাত্রিক কাগুজে পোকার মতোই
নির্দিষ্ট আবর্তে আমার জীবন,
আর তুমি থাক দশমাত্রিক জগতের অসীম বলয়ে
যেখানে ইচ্ছে তোমার বিচরণ।

বলতো কবিতা-

আমি বাদে আর কয়টা মাত্রায় তুমি আসো?
ঐসব মাত্রায় সবাই কি আমার মতোই বিনিদ্র?
তারাই বা কয়মাত্রিক কবিতার পূজারী?
চার, পাঁচ, ছয়, সাত নাকি আরো বেশী?

এককোষী অনুজীব হতে বহুকোষী বৃহদাকার
তোমার অন্তিকে সব হয় অস্তিত্ত্বহীন অনুজীব
বিস্মৃত গোলক আর মহাকালের মহামায়ায়
কবিতা তুমি বিলীয়মান হও প্যারাডক্স ধাঁধায়।

কবিতা, জানি তুমি আবার আসবে-

অদৃষ্ট কালে তুমি আসবে এই পরমাত্রিক হৃদয়ে
এবার আসবে অন্য এক পরবাস্তব কবিতা হয়ে।
সেদিন আমার বিচরন হবে দশমাত্রিক অসীম বলয়ে
আর হয়ত তুমি থাকবে ত্রিমাত্রিক জড় বস্তুর খাঁজে।

সেদিন তোমার কশেরুকাবিহীন অস্তিত্বে
হামাগুড়ি দিয়ে তোমার দেহের ঘ্রাণ নিবো।
সেদিন ত্রিমাত্রিক তুমি, আমায় ছুঁয়ে দিতেই
হারিয়ে যাবো তোমার চোখের প্যারাডক্সে।

আহা কবিতা!
বাস্তব আর পরাবস্তবতার মায়াজালে
আমরা এত কাছে, তবু কতই না দূরে!

সেদিন আমাদের কুটাভাসে-

আমি হবো বিচ্ছিন্ন, আবার আমিই আচ্ছন্ন।
আমি হবো সুস্থির, আবার আমিই অস্থির।
আমি হবো ক্ষুদ্র, আবার আমিই ব্রহ্মাণ্ড।
আমি হবো তুমি, আবার তুমিই আমি!

একুশ সূর্য

মায়ের ছেলেরা একুশের দ্বীপ্রহরে
১৪৪ ধারা কে বাংলার পায়ে পিশে।
বাংলা একাডেমিতে স্লোগানে মুখরিত,
দাবী একটাই- "রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই।"

হায়েনা বাহিনীর বিষাক্ত কার্তুজে
রফিক, শফিক, জব্বার প্রমূখের
বুকের কোটর হতে ঠিকরে পড়ে,
সবুজ বাংলার রুধির লালসূর্য।

মুক্তি পাগল ফিনিক্স পাখির মতই
কোটি বাঙ্গালীর ঘুম ভাঙ্গা মিছিলে-
উড়ায় লাল সবুজের স্বাধীন কেতন
বিশ্বের বুকে সৃষ্টি অনন্য বাংলাদেশ!

একুশ সূর্যে বিশ্ব জাতি হয় অালোকিত
শত কোটি প্রাণের বাজে বিল্পবী কণ্ঠ।
অমর একুশে কেপে উঠে বিশ্বদরবার
সকল কণ্ঠে মাতৃভাষার দৃঢ় অঙ্গিকার।

চকের পোড়া ক্ষত



নিমতলী হতে তাজরীন
এবার এলো চকবাজার
ওদের মরণে কে দায়ী?
দগদগে পোড়া বাংলা
নাকি মৃত্যুর ফেরেস্তা?
একে একে পোড়া ক্ষত বাড়ে
চক বাজারের লাশের মিছিলে।
রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভোর ঘুমে পড়ছে ডাঁক
ষোল কোটি হৃদয় অাজি পুড়ে খাঁক।

শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ঋতের মূলমন্ত্র

দূর হোক সকল মনের কালো
জিতুক সুপ্ত নবীন স্বপ্নগুলো।
মুছে যাক সকল অশুভ কলঙ্ক
ফিরে অাসুক সকল সুখগুলো।

ব্যাহতি হোক নিষ্ঠুর অন্যায়
জয় হোক শুধূ  সত্য ধারায়।
কাটুক সকল মনের অাধার
নবচেতনে ঐশ্বর্য বাধুক ঘর।

ধূয়ে যাক সব নৈরাশ্য কালি
ছুয়ে যাক মনে অাশার বাতি।
জ্ঞানে হোক পথ অালোকিত
মননে বাজুক ঋতের মূলমন্ত্র। 

বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

পাহারায় থেকে

প্রিয় সঙ্গোপনের তিন দোলনে
শাপমোচনের পথে যায় এগিয়ে,
নিঃশব্দ নিশ্বাসের দৈবী ছায়ায়
অলীক হৃদয় ভেসে যায় তীরে।
প্রিয় অন্তঃশিলার সুপ্তি চমকে
অবিমিশ্র চেতনায় পায় ফিরে,
নিশ্চিত অনন্তের ঐশী কুঠরি
খোয়াব গড়ে উষসীর নয়নে।
এঁকে অপরের পাহারায় থেকে.......

সোমবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৮

অস্তগামীর রং

গোধূলীর বেলাভূমিতে এসেছি 
তাঁর বুকের হ্রদে ডুবসাতার দিতে
অাধারের একমুটো কালো ছটায়অ
অস্তগামীর রং-এ সে এই বুকে।

সে এসেছিল নিরবতা ভেঙ্গে 
মহাকাল পরে মনোরঙ্গিনী হয়ে
স্তব্ধ হৃদে অবসানের প্রতিক্ষা
এক অপূর্ব কামনার সোভায়।

রক্তমেঘ, সান্ধ্যের অালপনায় 
বালুচরে এঁকেছি তাঁর প্রিয়মুখ,
হৃদয় ছুয়েছি হৃদয় দিয়েছি
কোন গোধূলী সন্ধ্যার তীরে।

শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮

কালপুরুষ

অাজকের চন্দ্রগ্রহণে অামার শনিগ্রহ
তার নিরব চূর্ণ আলোক কণায়-
মেঘের মহাপ্লাবণ; অঝোর ধারায় ঝরে
বৃষ্টি হয়ে মিশে যায় তোমার অাঙ্গিনায়।

অামি এক পতিত কালপুরুষ
মিশে যাই মহাকাশের মহাকালে।
ফিরে অাসবো বলে-
বৃষ্টিহীন কোন এক চন্দ্রগ্রহণে!

অামি কালপুরুষ-
স্বপ্নের সেই সিঁড়ি ভেঙ্গে
অাবার হবো আলোড়িত
মহাকালের অবাধ স্রোতে।

তোমার দ্রোহের অনলে!

এদেশের বুকে আবার আঠারো নেমে আসে

জুলাই ২৯, ২০১৮ রোববার, দুপুর ১২ঃ৩০।
রাক্ষুসে পঙ্গ পালের রক্তাক্ত  গড্ডলিকায় 
রমিজ উদ্দিনের শিক্ষার্থীর না ফেরার অপেক্ষা!

সাথে সাথে কোটি সন্তান সমস্বরে  বলে-
'মা তুমি আমার জন্য আর অপেক্ষা করো না,
আমি আর ঘরে ফিরবো না’!

পরিবহন খাতের বেপরোয়া দৌরাত্ম্যে 
রাষ্ট্রীয় তথকের যখন নির্লজ্জ অপভ্রষ্ট!
তখন মিম ও  রাজিব পিষানো দেহ আকুতি করে-
‘মা, ওরা বাস আর দেওয়ালটার মাঝখানে 
আমার জন্য জায়গা রাখল না’।

দূর্নীতির ঝান্ডা আর ক্ষমতার বড়াইয়ে 

যেখানে অপশাসনই হয় আইন!
সেই শৃঙ্খল ভেঙ্গে আজ রব ওঠে- 
"যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, 
যদি তুমি রুখে দাঁড়াও, তবে তুমি বাংলাদেশ’!

বুর্জোয়াঁ আর পাচাটাদের দাপটে

যেখানে মেকী সোনায় সয়লাব!
সেই মাটিতে আজ কোটি সোনারা গর্জে ওঠে-
‘মুজিব কোটে মুজিবকেই মানায়, চামচাকে না’!

রাজনৈতিক বাগড়ায় সুবিচার সোনার হরিণ
যেখানে নৈমিত্ত হয় অধিকার লঙ্ঘন!

সেই বৃত্তের বাইরে আজ নিষ্পাপ মুখে বুলি- 
 ‘4G স্পিড নেটওয়ার্ক নয়, 
4G স্পিড বিচার ব্যবস্থা চাই’!

হীরক রাজার যন্তর-মন্তর কলের মন্ত্রে 

যে দেশে চলতে হয় বন্ধ চোখে, মেকি হেসে
সেই রাজ্যে আজ নবচেতনায় রব হঠে-
‘আমরা ৯ টাকায় ১ জিবি চাই নানিরাপদ সড়ক চাই’!

ডিজিটাল গোয়েবলসীয়ে ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা

যেমন, বাংলাদেশে মাত্র ৪.২ শতাংশ বেকারত্ব!
র তাতেই নবপ্রজন্ম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর-
‘বি দ্য চেঞ্জমেকার টুডে অর বি দ্য ভিকটিম টুমরো’!

স্বাধীনতার সাতচল্লিশে ট্রাফিকের টুপাইস 

মাদক ও অপরাধের হয় অবাধ বিচরন।
তাই কোমলমতি প্রাণে বাজে অনাদরি বাণী- 
‘ছাত্রদের আপাতত রাস্তা সামলাতে দিন,
মন্ত্রী-পুলিশদের স্কুলে পাঠান শিক্ষিত করতে’!

পুলিশ উৎকোচ ও মেরুকেন্দ্রিক শাসনে 

র সনদবিহীন চাকলে আমলার শোডাউন!
তাই স্কুল পড়ুয়া সন্তানের মুখে একি কথা শুনি !
‘পুলিশ আংকেল, চা-সিগারেটের জন্য টিফিনের টাকা দিয়ে দিচ্ছি। তবু এসব গাড়ি চালাতে দিয়েন না’!

রাজিবের বিচ্ছিন্ন হাত, চলন্ত বাসে ধর্ষণ 
ওদের হাতের ময়লা
আহত ছাত্রকে নদীতে ফেলতে ওদের বুক কাঁপে না!
তাই বাংলা হৃদয়ের   জ ন্যায্য দাবী-
গে ডিজিটাল বাংলাদেশ চাই না, নিরাপদ সড়ক চাই’!


জনগনের রাজস্বে ওরা কোটি টাকার গাড়ী দাপায় 

লাল ফিতার জগতে তাদের খাইখাই স্বভাব!
এবার বালিতে মুখ লুকানো উঠপাখি মানুষ হয়-
'জনপ্রতিনিধিদের সপ্তাহে অন্তত তিনদিন গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হবে’!

দেখো, এদেশের বুকে আবার আঠারো নেমে আসে

এদেশ তাদের, এরাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ!
ঠারোর হৃদয়ে আজ প্রাণের দাবী-
‘সড়কে হত্যার একমাত্র শাস্তি, ফাঁসি চাই’।

মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১৮

সুরেণু ঝড়

তোমার হৃদয়ের সবটুকু লাল
অার অামার দ্রোহের অনল।
এক রন্ধ্র অার এক পুষ্পরথে
একক নবীন সূর্যের অাগমন।

শুধূ চেয়েছি তাকে বিমুগ্ধ মনে
দেখি সর্বনাশা ঐ অাখি কোণে।
অামারি শিরার প্রতিটি কণায়
তার সুরেণু ঝড় মাদল তালে।

বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮

মৌন বাসর

মম রবি অাজি কোন কোণে ধাঁয়
ওগো বাতায়নবর্তিনী ভালবাসি তোমায়!
হারাই হৃদয় মোরা সুদূর দেশে
মৌন বাসর অলোক পাড়ে

অায়না বন্ধন

রক্তকমল টিপ নন্দী ললাটে 
অায়না বন্ধন নবীন হৃদয়ে,
অাজি বাদল মুখর বাতায়নে
সখার বদন একেঁছি চোখে।

মায়াডোরে

কি মায়াডোরে বুনেছ এ হিয়া?
অাহা, কত্তো সুখে বেধেছ সখা।
কি খেয়ালে অামি তুমিতে মজি?
সখা, জানি অাজি তাহা জানি;
ভালবাসা, ভালবাসো, ভালবাসি!

জাতিস্মরে

প্রজন্মান্তরে দীপ জ্বেলে যাই
অগ্নি অমরাবতীর ললাটিকায়।
বেঁচে থাকি তাহার হাস্যকোণে
ফিরে অাসি পুনঃ জাতিস্মরে

ডায়াসপোরা

অামার অামি ডায়াসপোরা,
তোমার গহিনে চমক তোলা।
অামার অামি বিষম একলা
তোমার হদয়ের পবন দোলা।

হোমো সাসের

বরজ ক্ষেতে নরকী বুনন
উর্বর পলিতে মরণ রসায়ন।
'শান্তি জয়ী'-র রোহিঙ্গার প্রাণনাশ
পূণ্যি লভে 'হোমো সাসের' অাবির্ভাব।

তিমিরে শপথ

রোজা নামচায় অালুনি স্মাণ
প্রভাত রাঙ্গাতে দীপ্ত ম্লাণ।
অষ্ঠপ্রহর তক্কে মিছি ভাবনা
তিমিরে শপথ নিরবে শুক্লা।

রঙ্গকাল

অামি মহাকাল

অামি অাকাশ অামি পাতাল অামি সুউচ্চ অামি পতিত। অামি নম্র অামি লৌহ অামি হার অামি বিজিত। অামি হাস্য অামি অশ্রু অামি মিলন অামি বিরহ। অাম...