সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৬

শোকাবহ অাগস্ট

"দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা রক্তগঙ্গা বহমান,
তবু নাহি ভয়, হবে হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান।"

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে তাঁর দলের ভেতর লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা সেনাবাহিনীর একটি অংশের মাধ্যমে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে।

বঙ্গবন্ধু কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি ইতিহাসের এক অনন্য ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব, বাঙালি জাতির জাতীয় জাগরণের অবিসংবাদিত নেতা ও স্বাধীনতার স্থপতি।

যদিও ইতিহাসের প্রতিটি বিজয়েই একজন মহানায়ক হয়ে ওঠেন।কিন্তু তিনি একা এ মহানায়ক যেমন হয়ে ওঠতে পারেন না, তেমনি পারেন না বিজয় সুনিশ্চিত করতে। তাতে সরাসরি ভূমিকা ছিলো অামজনতার মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন।

নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কিছু ভুলই শাসনই হিসেবে তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে তাঁর অনুপস্থিতিতে যারা বহু প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে যুদ্ধ পরিচালনা করেছে, অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে তিনি তাদের সাথে সম্মিলিতভাবে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।

স্বাধীন দেশের জন্য প্রয়োজন ছিল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল দল ও শক্তিকে নিয়ে বিপ্লবী জাতীয় সরকার গড়ে তোলা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা না করে আওয়ামী লীগের একক দলীয় সরকার গঠন করেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা লৌহ কঠিন জাতীয় ঐক্য ভেঙ্গে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের শক্তি দ্বিধা বিভক্ত হয়ে যায়। যার ফলে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত জাসদ, জেডিসির মত দল ব্যপক জনপ্রিয়তা পায়। তাছাড়া একই বিভক্তির সুযোগে স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানকামীরা একাট্টা হতে থাকে। বিভক্তির চুড়ান্ত ফলাফল হলো পরবর্তীতে শহীদ রাষ্টনায়ক ও অানুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষক জিয়ায়ুর রহমান ও রাষ্টপতি হুসাইন মোহাম্মদ এর অালাদা ও একক দল গঠনের দুঃসাহস ও তাতে পুরোপুরিভাবে সফলতা লাভ।

ফলশ্রুতিতে গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামের ঐতিহ্য নিঃশেষিত হয়ে যায় এবং তিনি ব্যাপকভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর জনবিচ্ছিন্নতার সুযোগ গ্রহণ করে তার দলের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে নিম্নপর্যায় পর্যন্ত ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা। বাঙালির জাতীয় ভাবাদর্শ পরিবর্তনে তারা পাকিস্তান প্রেমিকদেরও সহযোগিতা লাভ করে। যার চুড়ান্ত ফলাফল ১৫ অাগস্ট, ১৯৭৫।

তথাপি, তাঁর জীবনের অপরিসীম সাফল্য ও ভুলের দিকগুলো বিশ্লেষণ করে তাঁর অবদানে কাছে ভুল সমূহ একেবারেই তুচ্ছ। তাঁর কীর্তি তাঁকে রাখবে অম্লান, বেঁচে থাকবে সকল বাঙ্গালির মাঝে। অাজকের শোকাবহ দিনে জাতীর পিতাকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্বরণ করছি।

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মজিবুর রহমান।"

কোন মন্তব্য নেই:

রঙ্গকাল

অামি মহাকাল

অামি অাকাশ অামি পাতাল অামি সুউচ্চ অামি পতিত। অামি নম্র অামি লৌহ অামি হার অামি বিজিত। অামি হাস্য অামি অশ্রু অামি মিলন অামি বিরহ। অাম...